এনামুল হাসান শাহিন (কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি)
বাংলাদেশে মুসলিম ঐতিহ্যের সেরা নিদর্শন হিসেবে বিখ্যাত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ।
২০২৩ সালের প্রথম সপ্তাহে মসজিদটির দান বাক্সে পাওয়া যায় ২০ বস্তা টাকা। এতে টাকার পরমাণ ছিল ৪ কোটি ১৮ লাখেরও বেশি টাকা।
প্রাচীন ও আধুনিক স্থাপত্যের ঐতিহাসিক নিদর্শনে ঘেরা মসজিদটি। এটি প্রায় দুইশত পঞ্চাশ বছরের পুরনো। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ দেখা ও নামাজ পড়ার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসে। কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধে পাগলা মসজিদ অন্যতম। কিশোরগঞ্জের হারুয়া এলাকার নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটির অবস্থান।
মানুষকে বলতে শোনা যায়, পূর্বে এ স্থানে নরসুন্দা তীরে একজন পাগল থাকতো এবং নামাজ আদায় করতো, তাই মসজিদের নামকরণ হয় পাগলা মসজিদ। নাম করণের আরও নানান কাহিনী লোকমুখে প্রচলিত রয়েছ। মসজিদটি প্রথম দিকে ১০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত হলেও বর্তমানে এটি ৩ একর তথা ৮৮ শতাংশ বিস্তৃত জমির রয়েছে।
পাগলা মসজিদটির রাতের সৌন্দর্য আশেপাশের মানুষের বিমোহিত করে। রাতে মসজিদের ভিতরাংশে ঝারবাতি এবং বহিরাংশে সবুজ বাতি প্রজ্বলন করা হয়। মিনারগুলোতে আলোর বাহার দেখা যায়। ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোকে খুবই আকৃষ্ট করে।
কথিত আছে, খাছ নিয়তে পাগলা মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। আর সে জন্য অসংখ্য মানুষ এসে এ মসজিদে দান খয়রাত করে থাকেন। মসজিদটিতে ৮টি লোহার দান বাক্স রয়েছে। এখানে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা রূপা, টাকা পয়সা ছাড়াও মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।
তিন মাস পরপর এ মসজিদের দান বাক্স খোলা হয়। দান বাক্স খোলার সময় এতে অংশ নেয়- মাদ্রাসার ছাত্ররা, ম্যাজিস্ট্রেট, মসজিদ কমিটি, ব্যাংকের স্টাফ, আনসার সদস্য, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সম্মুখে দানবাক্সের মুখ খোলা হয়।
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণ কাজে ব্যায় করা হয়। এছাড়াও করোনার দুঃসময়ে অসহায় মানুষের সেবায় অনুদান দেওয়া হয়েছিল।
ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার নির্মাণ ব্যায় হতে পারে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে একসাথে ৬০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন।