চ্যানেল ১১ নিউজ (অনলাইন ডেস্ক)
বাংলা চলচিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র, সময়ের সাড়া জাগানো চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা গেছেন। “মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল” সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
১৫ মে সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় ইহ জগতের মায়া ত্যাগ করেন তিনি। চিত্র নায়ক ফারুকের পরিবারের সদস্যরা এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
আগামীকাল মঙ্গলবার তার মরদেহ ঢাকায় আনা হবে।
আকবর হোসেন পাঠান দুলু যিনি ফারুক নামে অধিক পরিচিত। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত জলছবি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তিনি লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাই-সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন।
ফারুক ১৮ আগস্ট ১৯৪৮ সালে মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল পুরান ঢাকায় কাটলেও বর্তমানে বসবাস করছেন উত্তরায় নিজ বাড়িতে। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
ফারুক ১৯৭১ সালে “জলছবি” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু। তার বিপরীতে নায়িকা ছিলেন কবরী। ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত আবার ‘তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ দুটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭৫ সালে গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত সুজন সখী ও লাঠিয়াল দুটি ব্যবসাসফল ও আলোচিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং সে বছর লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
এরপর ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত তিনটি ছায়াছবি সূর্যগ্রহণ, মাটির মায়া ও নয়নমনি। চলচ্চিত্র তিনটি বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। পরের বছর শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত কালজয়ী উপন্যাস সারেং বৌ অবলম্বনে নির্মিত ‘সারেং বৌ’ ও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র দুটি নারীকেন্দ্রিক হলেও তার অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।
১৯৮৭ সালে মিয়া ভাই চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে মিয়া ভাই হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত ফারুক। চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে তিনি সবার প্রিয় ‘মিঞা ভাই’।