অনলাইন ডেস্ক
জামালপুরের ইসলামপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে গাঁজার গাছ উদ্ধারসহ মাদকদ্রব্য সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঘটনাটির সাথে সংশ্লিষ্ট রিফাত আহমেদ ও রায়হান এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে মাদকের রাজ্য তৈরি করেছিলো। তার প্রতিবাদ করলে তাদেরকে হুমকি ও মারধর করা হতো।
শুক্রবার (০২জুন) রাতে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির ২১৪ নম্বর কক্ষ থেকে গাঁজার গাছসহ ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম ও মদের বোতল উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা পালিয়ে গেলে কাউকে আটক করা যায়নি।
অভিযুক্তরা হলেন- শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত আহাম্মেদ তিনি ইসলামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও ইসলামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিয়ার ভাগিনা বলে যানা যায়। এছাড়া রায়হান কলেজটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও পৌর ছাত্রলীগের ৭নং ওয়ার্ডের সভাপতি।
কলেজটির শিক্ষার্থী রাফি বলেন, বিভিন্ন সময় ইসলামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিয়ার ভাগিনা রিফাত আহাম্মেদ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। সেই সাথে আমাদের কলেজের ২১৪ নম্বর রুমে একটি গাঁজা গাছ রোপন করে রিফাত ও আরেক ছাত্রলীগ নেতা রায়হান৷ এছাড়া ওই রুমটিতে গিয়ে তারা অনেকবার ইয়াবা সেবন ও মদপানসহ নানা অপকর্ম করে। বিষয়টি নিয়ে আমরা শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে আমাদের মারধর ও মৃত্যুর হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, গতকাল রাতে তাদের এই অপকর্ম সহ্য না করতে পেরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে গাঁজার গাছ, মদের বোতল ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর আগেই রিফাত ও রায়হান তাদের সন্ত্রাসীদের নিয়ে পালিয়ে যায়।
তাসনিম নামের আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমরা কলেজে শান্তি মত থাকতে পারিনা। ছাত্রলীগের প্রভাব দেখিয়ে তারা অপকর্ম করে আমরা কিছু বললে আমাদের মারধর করে। আমাদের কক্ষ ছেড়ে যেতে বলে। আমরা এর বিচার চাই৷
এ বিষয়ে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার শাহ বলেন, গতকাল দুই পক্ষ ছাত্রের ভেতরে মারামারি হয়। পরে পুলিশ আসে পরিস্থিতি সামাল দিতে৷ কিন্তু পুলিশ আসার পর একটি রুমে টপের ভেতর একটি গাছের চারা পাওয়া গেছে৷ আমরা সন্দেহ করছি এটি গাঁজা গাছের চারা হবে৷ ক্যাম্পাসে দুই একজন থাকতে পারে যারা এডাক্টেট হবে হয়তো৷ এগুলো পুলিশ জব্দ করে নিয়ে যায়৷ আমরা এই ঘটনাটির জন্য একটি তদন্ত কমিটি করেছি। আমরা শক্তভাবে বিষয়টি দেখতেছি৷ যারাই এই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকুক না কেনো আমরা শক্তভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ইসলামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিয়া বলেন, ছেলেগুলো আমাদের ছাত্রলীগের সদস্য। এর মধ্যে রিফাত আমাকে মামা করে ডাকে। সেখান থেকেই আমি তাকে ভাগিনা বলে ডাকি। এসব কার্যক্রম সম্পর্কে আমি জানতাম না। গতকাল শুনেছি৷ আমরা আমাদের মত তদন্ত করবো বিষয়টি নিয়ে। আমাদের সদস্য যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
ইসলামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান বলেন, গতকাল আমরা একটি ঝামেলার কথা শুনে কলেজটিতে যাই৷ সেখানে গিয়ে এসব মাদকদ্রব্য সেবনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধারসহ একটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি৷ ওই ক্যাম্পাস এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে৷