চ্যানেল ১১ নিউজ (অনলাইন ডেস্ক)
জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে হাজরাবাড়ী পৌর যুবলীগ এক নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে অভিযুক্ত মুজিবুল হাসান শামীম হাজারীর (৩৮) বিরুদ্ধে জামালপুর সদর থানায় মামলা করেন।
অভিযুক্ত মুজিবুল হাসান হাজড়াবাড়ী পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি। তিনি মেলান্দহ উপজেলার কড়ইচড়া গ্রামের মৃত এ কে এম হাসান হাজারীর ছেলে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে মুজিবুল হাসানের সঙ্গে ওই নারীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত এপ্রিল মাসে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। পরে বিয়ের জন্য ওই যুবলীগ নেতাকে চাপ দেন ওই নারী। কিন্তু ওই নেতা একপর্যায়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। বাধ্য হয়ে ওই নারী সোমবার সকালে ওই নেতার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই নেতার স্বজনরা ওই নারীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। মঙ্গলবার বিকালে ওই নারী জামালপুর সদর থানায় এসে মুজিবুলকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, প্রায় একবছর আগে শামীম হাজারীর সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে মসজিদের ইমামের মাধ্যমে বিয়ে করে। বিয়ের পর জামালপুর পৌরসভার নতুন হাইস্কুল মোড়ে একটি ভাড়া বাসায় দীর্ঘদিন থাকি। আমার এর আগে বিয়ে হয়েছিল। তার কথায় আমি সেই স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসি। মাঝেমধ্যে শামীম হাজারী এসে আমার ভাড়া বাসায় থাকত। একপর্যায়ে আমি কাবিন করার জন্য তাকে চাপ দিলে সে আমার সাথে গত একমাস যাবত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাকে না পেয়ে শামীম হাজারীর বাড়িতে যাই। গিয়ে দেখি, তার ঘর তালাবদ্ধ। আমার আসার খবর পেয়ে তারা সবাই পালিয়ে যায়। আমি সোমবার দুপুর ১২টার দিকে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে তাদের বাসায় গেলে তার চাচাতো বোন হ্যাপি ও সেতু আমাকে তিনতলা থেকে টেনে হিঁচড়ে বাসা থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে আমাকে মারধরও করে। শামীম হাজারী যদি এখন আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দেয়, তাহলে আমার আত্মহত্যা হত্যা ছাড়া কোন পথ থাকবে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শামীম হাজারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এর জন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মেলান্দহ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন বাঘা জানান, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। যদি সে অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত থাকে, সেটা প্রমাণিত হয়- আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ ইমন বলেন, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।