মাইদুল ইসলাম (গাইবান্ধা প্রতিনিধি)
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে স্ত্রীকে খুনের পর থানায় গিয়ে খুনের দায় স্বীকার করে মহসীন আলী (২৭) নামে এক ঘাতক স্বামী থানা পুলিশের নিকট আত্মসমর্পণ করেছে। অভিযুক্ত স্বামী মহসীন আলী জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে।
খুনের শিকার গৃহবধু শেফালী বেগম (২৬) গাইবান্ধা সদরের মোল্লাপাড়ার মৃত কাদের মোল্লার মেয়ে।
৮ জুলাই শনিবার রাত ৮টার দিকে নলডাঙ্গা ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় নিহতের হাতে থাকা একটি চিরকুট উদ্ধার করে তারা।গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে শেফালী খাতুন নামে ওই গৃহবধূকে খুন করে স্বামী মহসীন আলী। পরে সে এ ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসাবে প্রমাণে ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে শয়নকক্ষের বাঁশঝাড়ের সাথে শেফালী বেগমের মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে।
স্থানীয়রা জানায়, ৪ বছর আগে মহসীন আলীর সাথে শেফালী খাতুনের বিয়ে হয়। মহসীন আলী কোনো কাজকর্ম করত না। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্ত্রীর সাথে প্রায়ই ঝগড়া লাগতো।পাশাপাশি শেফালীর কোনো সন্তান না হওয়ায় মহসীন ক্ষুব্ধ ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় ঝগড়ার একপর্যায়ে মহসীন আলী স্ত্রীর ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে শেফালীকে খুন করে। পরে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করতে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে সে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা শেফালীর হাতে একটি চিরকুট ছিল। এতে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, কারো কোনো দোষ নেই’। থানা পুলিশ কর্তৃক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর সে প্রতিবেশীদের জানিয়ে খুনের দায় স্বীকার করে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে।
এদিকে খবর পেয়ে থানা পুলিশের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গাইবান্ধা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান সাদুল্লাপুর থানায় যান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান,এটি একটি খুনের ঘটনা। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, ঘাতক স্বামী অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারণে হতাশাগ্রস্ত ছিল। সে স্ত্রীকে চারিত্রিক-ভাবে সন্দেহ করত। এছাড়াও স্ত্রী ‘কুফরি কালাম’ করত, যা তার পছন্দ ছিল না। এসব কারণে সে স্ত্রীকে হত্যা করে। তবে পুরো ব্যাপারটিকে আরও ব্যাপকভাবে তদন্ত করা হবে।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহাবুর রহমান বলেন,মরদেহ উদ্ধারের পরপর থানায় এসে স্বামী মহসিন আলী হত্যার দায় স্বীকার করে আত্মসমর্পন করেছে।