ছবিঃ প্রতীকী
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মাদারগঞ্জ
জামালপুরের মাদারগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ এর ভূতড়ে বিল অতিষ্ঠ শত শত গ্রাহক। অনুসন্ধানে জানা গেছে যত্র তত্র বিল করে গ্রাহকদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ। যাহা মিটার রিডিং এর সাথে বিলের কাগজের সাথে কোন মিল নেই।
মাদারগঞ্জ জোনাল অফিস এর আওতায় বিদ্যুৎ গ্রাহক প্রায় ৫০ হাজার। অনেক গ্রাহকের বিলের কাগজ দেখে জানা গেছে গত মে, জুন,জুলাই,আগস্ট মাসে স্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল আসলেও সেপ্টেম্বরে দেখা গেছে অনেক গ্রাহকের অস্বাভাবিক বিল আসছে যা অকল্পনীয়। বিলের এমন অবস্থা দেখে হতাশ শত শত গ্রাহক।
কোন কোন গ্রাহক অস্বাভাবিক বিল দেখেই বিদ্যুৎ বিলের কাগজ সাথে সাথেই তার কাছেই ফেরত দিয়েছে। আবার কোন গ্রাহক আছে পূর্বের মাসের বিল পরিশোধ করার পরও বর্তমান বিলের সাথে যোগ করা হয়েছে ঐ বিল, অফিসে অভিযোগ দিতে গিয়েও হয়রানির স্বীকার হতে হয় এবং কোন সমাধান দেয় না বিধায় অনেকটাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করে শত শত গ্রাহক এমনটি অভিযোগ করছেন বিদ্যুৎ গ্রাহকরা। উত্তর চর বওলা প্রাঃ বাড়ি জামে মসজিদ এর মুয়াজ্জিন আব্দুল মালেক জানান মসজিদের নামে বিলের কাগজে মে-৪২৯, জুন-৪৪৯,জুলাই-১৫৯৯, আগস্ট-৪৪৯ টাকা বিল আসে এবং নিয়মিত বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু সেপ্টেম্বর/২৩ এর বিল আসে প্রায় ৫ হাজার টাকা যাহা বিগত মাসের বিলের তুলনায় ৮ গুন বেশী। বিল অস্বাভাবিক আসার ফলে বিলের কাগজ তার কাছেই সাথে সাথেই ফেরত দিয়েছি। গুনারীতলা এলাকার গ্রাহক মুক্তা মিয়ার স্ত্রী বুলবুলি বিদ্যুৎ বিল দিতে এসে জানান ৩ মাস যাবৎ বিদ্যুৎ বিল বেশী আসে জুন-১৮৫,জুলাই-৭৯৭, আগস্ট-১১৮১, সেপ্টেম্বর/২৩ এ ৮১৪ টাকা । চরপাকেরদহ ইউনিয়নের হিদাগাড়ী এলাকার গ্রাহক আঃ মাজেদ এর বোন উপজেলা বিল দিতে এসে জানান আগস্টে বিল আসে ২৭৬ টাকা এবং সেপ্টেম্বরে কাগজে ৩শ ইউনিট দেখিয়ে ২১০৩ টাকা বিদ্যুৎ বিল এর কাগজ দেয় যা অকল্পনীয়। কোন অভিযোগ কাজে না লাগায় বাধ্য হয়ে বিল পরিশোধ করে আসি। বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহক খাঁজা মিয়া জানান জুন- ৬০ ইউনিটে ৩৬৯ টাকা,জুলাই- ৬০ ইউনিটে ৩৬৯, আগস্ট- ৮০ ইউনিটে ৪৮০ টাকা এবং সেপ্টেম্বর/২৩ এ ১৪০ ইউনিটে বিল আসে ১৪৮৩ টাকা, অভিযোগ দিয়েও কোন কাজ হয়নি শুধু হয়রানি করায় বাধ্য হয়ে গত বৃহস্পতিবারে বিল পরিশোধ করে আসি। চর বওলা এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহক সুজন মিয়া জানান আমার গ্রাহক হিসাব নং- ১০২৩০৬৭২৯৫৬৮৫, জুন-৫০ ইউনিট,জুলাই-৫০ ইউনিট, আগস্টেও ৫০ ইউনিট যার প্রতিমাসে বিল আসে ২৭৬ কারণ শুধু মিটার চালু আছে কিন্তুু ভিতরে কোন কিছু ব্যবহার করি না। কোন মাসের বকেয়া বিল নেই। হঠাৎ করে সেপ্টেম্বর/২৩ এ বিলের কাগজে দেখি ৭৭০ ইউনিট বিল আসে ৮ হাজার ৪শত ২৬ টাকা। এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বিদ্যুৎ অফিসের এমন কর্মকান্ড দেখে আমরা হতাশ।
এর ফলে ২৫ তারিখে অভিযোগ দেই ২৭ তারিখ বিল দেওয়ার শেষ দিন ছিল। রাগ করে আমরা আর খোঁজ নেই নি। একই বাড়ীর তার বড় ভাই বিদ্যুৎ গ্রাহক আইনাল হক তার স্ত্রী বেওয়ালা বেগম জানান জুন- ১৩০ ইউনিট বিল আসে ৮২৫,জুলাই- ১৫০ ইউনিট বিল ১০৫০, আগস্টে ১২০ ইউনিট ১৮৮৯ টাকা এবং হঠাৎ করে সেপ্টেম্বর/২৩ এর বিলের কাগজে ইউনিট ৭৫৫ দেখিয়ে ৭৯১৮ টাকা বিলের কাগজ ধরিয়ে দেয় যা দেখে আমরা হতাশ হয়ে যাই। অভিযোগ দিয়ে আসছি কোন ব্যবস্থা না নিলে এ বিল পরিশোধ করবো না। সেপ্টেম্বর/২৩ বিল এর বিষয়ে অনেক অভিযোগ যার কারণ বিগত মাসের তুলনায় ৩ থেকে ৮ গুন বিল বেশী আসায়। এ ব্যাপারে মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের বিলিং শাখার প্রধান আক্তারুন্নাহার কথা বলতে রাজি হননি। সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) এস.এম. রিফাত জানান বিল বেশী আসার বিষয়টি কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কারণে ও হয় যেমন রিডিং ম্যান যারা তাদের অনুরোধ করে গ্রাহকেরা যে ভাই এইবার ইউনিট একটু কম লিখেন বিভিন্ন স্থানে এরকম হওয়ার কারণে কত মাসে ইউনিট হয়ে যায় বেশী এমনটার কারণেও বিল বেশী আসতে পারে। এ অভিযোগে কয়েকজন কর্মীকে ছাটাই করা হয়েছে। তারপর ও হঠাৎ করে যদি অস্বাভাবিক বিল আসে সেটা অভিযোগ দিতে পারে।
জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মোঃ ওবায়দুল্লাহ আল মাসুম জানান বিল বেশী আসলে খতিয়ে দেখতে হবে। বিলিং শাখার পাশেই বারান্দায় অভিযোগ বক্স দেওয়া আছে সেখানে অভিযোগ দিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া কোন শাখায় অভিযোগ না নিলে আমার অফিসের দরজা অফিস চলাকালীন সব সময় খোলা আমার কাছেও অভিযোগ দিতে পারে। সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।