ছবিঃ চ্যানেল ১১ নিউজ
মোঃ নুর আলম,গোপালপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হোসেন খানের নাম শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজ বাঙ্গালের নামও শোনা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হোসেন খান বলেন,আমি এই আসনে দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ জনগণ আমাদের পাশে আছে।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজ বাঙ্গাল বলেন, জাতীয় পার্টিতে এই আসনে কোন কোন্দল নেই,তাই আমরা শতভাগ আশাবাদী এই আসনে এবার জাতীয় পার্টি বিজয়ী হবে। কারণ আওয়ামীলীগের নেতাদের মাঝে যে কোন্দল রয়েছে তার সুবিধা আমরা জাতীয়পার্টি পাবো ।
এই আসনে কখনোই কোনো একক দলের আধিপত্য দেখা যায়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিগত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে পাঁচ বার আওয়ামী লীগ, চার বার বিএনপি, এক বার করে জাতীয় পার্টি ও জাসদের (সিরাজ) প্রার্থী জয় লাভ করেন।
জানা যায়, ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. হাতেম আলী তালুকদার ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ পার্টির মো. হাতেম আলী খানকে পরাজিত করেন। ১৯৭৯ সালে বিএনপি প্রার্থী আফাজ উদ্দিন ফকির জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মো. হাতেম আলী তালুকদার। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামছুল হক তালুকদার ছানু আওয়ামী লীগের মো. হাতেম আলী তালুকদারকে পরাজিত করেন। ১৯৮৮ সালে নির্বাচিত হন জাসদের (সিরাজ) আ. মতিন হিরু। তিনি হারান জাতীয় পার্টির শামছুল হক তালুকদার ছানুকে। এরশাদের পতনের পর গণতন্ত্র-উত্তর প্রথম ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে বিএনপির আব্দুস সালাম পিন্টু আওয়ামী লীগের হাতেম আলী তালুকদারকে পরাজিত করেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদের নির্বাচনে বিএনপির আব্দুস সালাম পিন্টু পুনরায় এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হেরে যান আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামানের কাছে। ২০০১ সালে বিএনপি পুনরুদ্ধার করে আসনটি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামানকে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন আব্দুস সালাম পিন্টু। তিনি পান এক লাখ ৫ হাজার ২৭৩ ভোট, আর খন্দকার আসাদুজ্জামান পান এক লাখ দুই হাজার ৯৯৯ ভোট। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাল্লা ঘুরে খন্দকার আসাদুজ্জামানের দিকে। দ্বিতীয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন তিনি। আব্দুস সালাম পিন্টু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় কারাগারে থাকায় তার ছোট ভাই সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। খন্দকার আসাদুজ্জামান (আওয়ামী লীগ) পান এক লাখ ৪৪ হাজার ৭১০ ভোট, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু (বিএনপি) পান এক লাখ ৩ হাজার ৫০৯ ভোট। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামান ও জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) আব্দুল আজিজের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। তৃতীয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন খন্দকার আসাদুজ্জামান। এতে খন্দকার আসাদুজ্জামান পান এক লাখ ৪০ হাজার ৭৫৯ ভোট এবং আব্দুল আজিজ পান ৪ হাজার ২৯৬ ভোট। এরপর ২০১৮সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খন্দকার আসাদুজ্জামানের ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছোট মনির আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। বিএনপি প্রার্থী তৎকালীন জাতীয়তাবাদী যুব দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে পরাজিত করে ছোট মনির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৯৪ হাজার ৩৯৭ জন । এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৯৮ হাজার ৪৩৮ জন ও নারী এক লাখ ৯৫ হাজার ৯৫৭ জন।