ছবিঃ চ্যানেল ১১ নিউজ
উত্তম চাকমা,মহালছড়ি, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
ধান উৎপাদনের বড় মৌসুম হলো বোরো আবাদ। খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় কাপ্তাই হ্রদের জলেভাসা জমিতে শুরু হয়েছে বোরোধানের চাষ। কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে ভেসে ওঠা জমিত ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত পাহাড়ি কৃষকরা। যথা সময়ে কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসা জমিতে বোরো ধানের আবাদ শুরু হয়। পানি কমে গেলে ভেসে ওঠে জমি।
১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বললে ২নং মুবাছড়ি ইউনিয়নে খুল্যাংপাড়া গ্রামে সুরেশ কান্তি চাকমা (৩৮) বলেন জলে ভাসা জমিতে উৎপাদিত ফসলই আমাদের পুরো বছরের খাদ্যের যোগান দেয়। মৌসুমের আগে হ্রদের পানি না বাড়লে আমরা ফসল যথা সময়ে ঘরে তুলতে পারবো তেমনি লাভের অংকটা বেশি হবে। কাজের সময় আসলে লোকজন সংকটে তিন শত টাকা মজুরি দিয়েও লোক পাওয়া যায় না।
একই গ্রামের এক দিন মজুরি সাথে কথা হয় মিলি চাকমা (৪৫) বলেন আমাদের গ্রুপে ১২ জন লোক আছে। দিন মজুরি হিসেবে কাজ করি। ছেলেদের পাশাপাশি আমরাও বাড়ি কাজ ছাড়া দিন মজুরি কাজে পরিবারের অভাব অনটন খরচ জোগার করে থাকি। বোরো মৌসুমে সকালে ঘনকুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডাতেও বোরো আবাদের কাজ করি। আমরা দিন মজুরি হিসাবে ৩০০ টাকা পাই।
স্থায়ীবাসিন্দা একজন বর্গাচাষী কৃষক শান্তিজীবন চাকমা বলেন আমি প্রতি বিঘা পাচঁ হাজার টাকা দিয়ে তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করতেছি। ফসল যদি সঠিক সময়ে ঘরে তুলতে পারি তাহলে পুরো বছর আমার সংসার চলে যাবে।
মহালছড়ি উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকতা তৃপ্তি কর চাকমা বলেন বোরো মৌসুমের আবাদ চলমান। বোরো ধানের চারা রোপনে সাধারণত ১৫ই ডিসেম্বর থেকে ১৫ই জানুয়ারী মধ্যে চারা রোপণ উপযুক্ত সময়। ৩৫ থেকে ৪৫ দিন বয়সে চারা রোপন করতে হবে। সঠিক বয়সের চারা রোপন করলে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া সম্ভব। আরও জানান ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বোরো হাইব্রিড ধান ১২০০ পরিবার কৃষক ও উফশী ৮০০ পরিবার কৃষকদের মাঝে বীজধান ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করেন মহালছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য মতে জানা যায়, চলতি বোরো আবাদে উপজেলার ১২২৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য হাইব্রিড ৮৯৫ হেক্টর ও উফশী ৩৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হচ্ছে । আশা করি যথা সময়ে লক্ষ্য মাত্রা পুরন হবে।