ছবিঃ চ্যানেল ১১ নিউজ
গাইবান্ধায় সাংবাদিক রওশন আলম পাপুলের পরিবারের সদস্যদের ওপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে তাঁর বাবা, মা,ভাইসহ অন্তত ৮ জন মারাক্তক ভাবে জখম হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলায় শিকার আহত সবাই গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার ( ৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে গাইবান্ধা পৌরসভা নারায়নপুর মহিলা এতিমখানা সংলগ্ন এলাকায় পাপুলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে রাতে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হামলায় আহতরা হলেন সাংবাদিকের বাবা হোসেন আলী (৫৫), মা পারুল বেগম ( ৪৩), চাচা হাসেন আলী (৫০), সাজু মিয়া (৪৯), আব্দুল জলিল (৫২ ) কাঞ্চন বেগম (৩৯), বিপ্লব (২৫) ও মাহবুর রহমান।
পরিবারের স্বজনরা বলেন, বুধবার বিকাল ৪ টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকের বাবা-মা কাজ করতেছিলেন। এ সময় সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের আবুল হোসেন ও নারায়নপুর গ্রামের মধু মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া তার ভাইয়েরা ও বেশকিছু সন্ত্রাসী ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিক পাপুলের বসতবাড়ীতে ঢুকে তার পরিবারের উপর হামলা করে। পরে পরিবারকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তার বাবা হোসেন আলী, মা পারুল বেগম,চাচা হাসেন আলী, সাজু মিয়া, আবদুল জলিল মিয়া ও তার স্ত্রী কাঞ্চন বেগম, বিপ্লম মিয়া ও মাহবুর রহমানকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে আবুল হোসেনসহ অন্যরা। পরে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারী পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সাংবাদিক রওশন আলম পাপুল বলেন, পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর, আব্দুল মালেক, মধু মিয়া, রশিদুল ইসলাম ও তার ভায়েরা বেশকিছু সন্ত্রাসী আমার এবং আমার পরিবারের ওপর হামলা করেছে। এতে আমার বাবা, মা, চাচা ও চাচিসহ গুরুতর আহত হয়েছেন। এরমধ্যে আমার বাবার অবস্থা আশঙ্কজনক। বাবার মাথায় সেলাইসহ শরীরের গুরুতর জখম হয়েছে। তারা প্রকাশ্যে রাম দাহ দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মাটিতে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল আমিন বলেন ' আহত অবস্থায় সাংবাদিকের পরিবারের ৮ সদস্য হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছে। সকলের শরীরে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করে জখম করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সবার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসক ও নার্সরা সার্বক্ষনিক রোগিদের পর্যাবেক্ষণে রাখছেন।
মামলার বাদি হাছেন আলী বলেন, সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের আবুল হোসেন ও নারায়নপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, মধু মিয়ার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। এনিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা একাধিকবার শালিসে বসে। সেখানে আবুল হোসেনরা জমির মালিকানা সঠিক কাগজপত্র কিছুই দেখাতে পারেনি। কিন্তু সন্ত্রাসী কায়দায় ওই জমি দখল করার চেষ্টা করছে। তারই অংশ হিসেবে আমাদের দখলে বসতবাড়ীতে আজ হঠাৎ হামলা চালায় তারা। আমি এই হামলার সঠিক বিচার চাই।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। আসামিদের গ্রেফতারের পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, সাংবাদিক পাপুলের পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলার প্রবীন সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানান।