মোঃ এনামুল চৌধুরী, ফরিদপুর প্রতিনিধি
ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে জলবায়ু সুরক্ষায় নবায়নযোগ্য শক্তির উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণের দাবি জানিয়েছে ফরিদপুরের তরুণ জলবায়ুকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে এ জলবায়ু ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়। ফ্রাইডেস ফর ফিউচারের বাংলাদেশ গ্রুপ, প্রতীকি যুব সংসদ ও ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সদস্যদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি হয়েছে। এ সময় সমবেত জলবায়ু যোদ্ধারা নানা দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাদের দাবি প্রদর্শন করেন।
এসময় ধর্মঘটকারীরা জানান, বিশ্বের তাপমাত্রা আরও বাড়লে, খরা, বন্যা ও প্রচণ্ড গরমের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে। যা কয়েক মিলিয়ন মানুষের ধ্বংস, বাস্তুচ্যুতি ও দারিদ্র্যের কারণ হবে। বিশেষকরে বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর মানুষের জন্য এটি একটি বিড়ম্বনার বিষয়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনে এ অঞ্চলের লোকেরা সবচেয়ে কম ভূমিকা রাখলেও, সবচেয়ে বড় মূল্য তাদের দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মুখে পড়ার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশ বলে উল্লেখ করেন ধর্মঘটকারীরা।
ফরিদপুর জেলা সমন্বয়কারী শাহিনুর রহমান পান্ত বলেন, দিন দিন আমাদের পরিবেশ ও জলবায়ু এর অবস্থা খারাপ হচ্ছে এখনই আমাদের এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি নোট দিতে হবে। আজকে আমরা ইয়ুথনেট ফরিদপুর জেলার ভলেন্টিয়াররা জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের জন্য জলবায়ু ধর্মঘট পালন করছি। আমরা সামনে বাংলাদেশকে ১০০% নবায়নযোগ্য জ্বালানি দেশ হিসেবে দেখতে চাই। এই ক্লাইমেট স্ট্রাইক এ আমাদের সাথে সহযোগিতা করেছে ভলেন্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ও ইয়ুথ ফর পলিসি ফরিদপুর জেলা শাখা।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য শাহরীন ইসলাম মাহিন বলেন, জলবায়ু সুরক্ষা ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে নবায়নযোগ্য শক্তির উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ, জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ এবং জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানাচ্ছি আমরা। আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এখনই আন্দোলন করতে হবে না হলে পরে সাঁতার কাটতে হবে।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, ইয়ুথনেট ফরিদপুর জেলা সদস্যগণ তিহানুর রহমান, আবিদুল ইসলাম আবিদ, মাহিয়া সুলতানা মুক্ত, কাব্য রাহা, ওসমান ও তন্ময় তারা বলেন আমাদের ধর্মঘট থেকে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের কাছে আমরা দাবি জানাই যে, জ্বালানি ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ চাই, ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ চাই। তাই আমাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে তরুণ ও সচেতন মহলের এগিয়ে আসতে হবে।
এছাড়াও বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট নিয়ে এক বিবৃতিতে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাবের কারণে বিশ্ব এখন এক জটিল সময় পার করছে, জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই একে ‘বিশ্ব মানবতার জন্য রেড অ্যালার্ট’ হিসেবে ঘোষণাও করেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকার এবং বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই ক্ষতিকারক জীবাশ্ম জ্বালানির জলবায়ুবিধ্বংসী কার্যকলাপের দায় নিতে হবে।
কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদ জানিয়েছে ২০১৮ সালের আগস্টে সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে ‘স্কুল স্ট্রাইক ফর দ্য ক্লাইমেট’ লিখিত একটি প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতি শুক্রবার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পরে এ আন্দোলন নিয়ে তিনি বিভিন্ন প্লাটফর্মে কথা বলতে শুরু করেন। এর নাম করণ করেন ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’। সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এই আন্দোলন।